২৪’এর অভ্যুত্থানে হত্যাকারীদের বিচার নিশ্চিত করতে চাই: উপদেষ্টা আসিফ
দিনাজপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮:৫৭
২৪’এর অভ্যুত্থানে আমার ভাইদেরকে যারা শহীদ করেছে, আহত করেছে তাদের বিচার বাংলার জমিনে নিশ্চিত করতে চাই উল্লেখ করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, এমন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হবে, যেন বাংলাদেশে আর কখনো কোন স্বৈরাচার ফ্যাসিবাদী সরকার মাথা চাড়া দিতে না পারে।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেল তিনটার দিকে খানসামা উপজেলার পাকেরহাট গ্রোয়াস মাঠে জাতীয় নাগরিক কমিটির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডাক্তার আবুল আহাদের সভাপতিত্বে গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
রাজনৈতিক দলের উদ্দেশে আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া আরো বলেন, আবার নতুন করে চাঁদাবাজ দখলদারিত্ব করে বাংলাদেশের মানুষকে আবারও সেই দুঃশাসনের মধ্যে ঠেলে দিবেন না। আপনাদের প্রতি উদাত্ত আহবান থাকবে আপনারা চাঁদাবাজ দখলদার, দুর্নীতিবাজদের কি অবস্থা হয়। আপনারা যদি নিজেদের সেই পরিণতি না চান। তাহলে আল্লাহর ওয়াস্তে যত ধরনের দুর্নীতি চাঁদাবাজি এবং দখলদারদের সাথে যুক্ত হয়েছেন সেখান থেকে সরে আসুন। বাংলাদেশের মানুষ আপনাদেরকে প্রাণভরে ভালবাসবে, স্বাগত জানাবে।
উপদেষ্ট আরও বলেন, শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার জন্য ভারতকে চিঠি দেয়া হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যেই শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনা হবে। উপস্থিত জনতাকে উদ্দেশ্য করে উপদেষ্টা আরো বলেন, তিন বিভাগে বিপিএল আয়োজন করা হচ্ছে। উত্তরবঙ্গে একটা আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়াম তৈরি করে আগামী বছর বিপিএল আয়োজন করতে চাই। আপনারা জানেন এত রক্তের বিনিময়ে আমরা দেশ স্বাধীন করেছি সেই স্বাধীনতা দীর্ঘমেয়াদে এদেশের জনগণ ভোগ করতে পারে। সেজন্য সরকার সকল সেক্টরে সংস্কার কার্যক্রম গ্রহণ করেছে।
তিনি বলেন, আপনাদের মতামত, সহযোগিতা ও সমর্থন দিয়ে সংস্কার কার্যক্রমে সহযোগিতা করবেন। এবং কেমন বাংলাদেশ চান সেটা আমাদেরকে ও সংস্কার কমিশনগুলোকে জানাবেন, পরামর্শ দিবেন। বাংলাদেশের মানুষ যেমন বাংলাদেশ চায় আমরা সেরকম বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই।জুলাই অভুত্থানে যারা জীবন দিয়েছেন, আহত হয়েছেন তারা বাংলাদেশের একটা কাঠামোগত পরিবর্তনের জন্য ত্যাগ স্বীকার করেছেন। সেই ত্যাগ যেন বৃথা না যায় সেজন্য আমরা সংস্কার কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। ইতিমধ্যে সংস্কার কমিশনগুলো কাজ করছে।
তিনি বলেন, দিনাজপুরের দুটি উপজেলা ভ্রমণ করে রাস্তাঘাট , ব্রিজ কালভার্টের দ্রুত সময়ের মধ্যে উন্নয়ন করা হবে। এবং হাসপাতালগুলোতে দ্রুত সময়ের মধ্যে জনবল নিয়োগ করা হবে। এক জরিপে দেখা গেছে খানসামা উপজেলার শিক্ষার হার ৪৭ শতাংশ । যা আমাকে ব্যথিত করেছে। আপনাদের সন্তানকে স্কুলে পাঠাবেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভবনগুলো নতুনভাবে তৈরি করা হবে। যাতে শিক্ষা সম্প্রসারণ করে এর মান নিশ্চিত করা যায়। খানসামায় ২০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল সংকট আছে তা নিরসন করার চেষ্টা করা হবে। এছাড়া খানসামা উপজেলা উন্নয়নে যেসব প্রস্তাব আমরা পেয়েছি যেন কোনদিক থেকেই এই উপজেলা পিছিয়ে না থাকে আমরা সেটি নিশ্চিত করবো।
গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আরোও বক্তব্য রাখেন জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সাঈদ মোস্তাকিম। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা বক্তব্য রাখেন। এর আগে সকালে দিনাজপুর জেলার কাহারোল ও খানসামা উপজেলার উপজেলা অডিটরিয়ামে অসহায় দরিদ্র ও শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ ও উপজেলা পর্যায়ে কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভা করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন দিন দিনাজপুর জেলা প্রশাসক রফিকুল ইসলাম পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান সহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশ জার্নাল/এমপি